১৪’ই ফেব্রুয়ারী, ভালবাসা দিবস নয় এ যেন অশ্লীলতার আগ্রাসন দিবস।

0
14

১৪’ই ফেব্রুয়ারী, ভালবাসা দিবস নয় এ যেন অশ্লীলতার আগ্রাসন দিবস

মোঃ ছাইফুল ইসলাম-(জিহাদ), নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

১৪’ই ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস বা দ্য ভ্যালেন্টাইনস ডে। এ দিনে সারা বিশ্বে একযোগে উদযাপিত হবে ভালবাসা দিবস। দিবসটিকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্ব হয়ে উঠে উন্মাতাল। অত্যাধুনিক ফ্যাশনের উপহারে ছেয়ে যাবে হাটবাজার। রেস্তোরাঁগুলো সাজানো হবে নতুন সাজে। পার্কগুলোকে তৈরি করা হবে যুবক-যুবতীর চাহিদামাফিক। সারা দিন চলবে হৈ চৈ, উন্মাদনা। প্রেমিক যুগলের চোখে মুখে থাকবে যৌন উত্তেজনা। এ দিনে তরুণ-তরুণীর বেহাল দশা দেখে শয়তানও লজ্জিত হবে। আর এগুলো সব হবে সভ্যতার নামে, সংস্কৃতির নামে। সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ৯২ ভাগ মুসলিম দেশে, মসজিদের শহর ঢাকাসহ দেশের সব শহরে বন্দরে, স্কুল-কলেজ ও পার্কের আঙ্গিনায় চলবে এ অসভ্যতা ও পশুত্ব। কারণ আন্তর্জাতিক শক্তি মুসলমানদের চরিত্রহীন করার জন্য, যুবসমাজকে বিপদগামী করার জন্য নানা ধরনের আয়োজন করে যাচ্ছে। বিভিন্ন চাকচিক্যের মাধ্যমে যুবকদের বিপদগামী করছে অন্যায়ের পথে তাদের অগ্রসর করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে এক শ্রেণির লোকেরা আমাদের এই মুসলিম দেশে নতুন এক ধরনের সংস্কৃতি আমদানী করেছে। নতুন এক দিবস ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ ভালবাসা দিবসের নামে তারা পালন শুরু করেছে।

আজ বিশ্বের বহু স্থানে মুসলিমরা তাদের চালচলন, রীতিনীতি এবং উৎসব উদযাপনের ক্ষেত্রে ইহুদী ও খ্রীস্টানদের অনুসরণ করছে। টিভি, স্যাটেলাইট চ্যানেল গুলোর প্রচারে কাফিরদের অনুসৃত সমস্ত রীতিনীতি আজ মুসলিমদের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে এবং এর অনুসরণ ও অনুকরণ সহজতর হয়ে উঠেছে। মুসলিম সমাজে প্রচলিত এরূপ বহু অপসংস্কৃতির সাথে একটি সাম্প্রতিক সংযোজন হচ্ছে “ভ্যালেন্টাইন’স ডে”, যা “ভালবাসা দিবস” নামে মুসলিম সমাজের যুবক-যুবতীদের মাঝে ঢুকে পড়েছে এবং ক্রমে জনপ্রিয়তা লাভ করছে, পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এ দিবসটি পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করছে। এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলাম ধর্মকে নষ্ট করে এই ভালবাসা দিবসকে মূল্যায়ন করে মুসলিম সমাজের যুবক-যুবতীদের বোধশক্তিকে নষ্ট করে তাদেরকে কাফিরদের অন্ধ অনুসরণের দিকে অগ্রসর হওয়া৷ নিশ্চয়ই ইহুদী ও খ্রীস্টানসহ অন্যান্য কাফিরদের সংস্কৃতির অনুসরণের পরিনাম হবে জাহান্নামের আগুন, তাই বর্তমান নিবন্ধের উদ্দেশ্য আমাদের যুবসম্প্রদায়কে জাহান্নামের পথ থেকে ফিরিয়ে জান্নাতের প্রশান্তির দিকে আহবান করা।

মা বাবার সঙ্গে সন্তানের প্রেম, ভাইবোনের প্রেম, স্বামী স্ত্রী ও সন্তানের প্রেম, মানবতার প্রেমই পবিত্র হতে পারে। এছাড়া অন্য নর-নারী, যুবক-যুবতী বিবাহ পূর্ব প্রেম এটা পবিত্র প্রেম হতে পারে না। এটা অন্যায় ও মহাপাপ। এ প্রেম খেলায় মেতে উঠে আমাদের সভ্যতার ভিত ধসে গেছে। মানুষের সমাজ পশুর সমাজে পরিণত হয়েছে। আবার প্রেমিক খুন করছে তার প্রেমিকাকে। কিন্তু আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীরা জাতির এ করুণ দশা দেখেও আমাদের মানব সমাজের ধ্বংসাত্মক পরিণতি উপলব্ধি করে না। এ সুকৌশলে আমাদের যুব সমাজের চরিত্রে আঘাত করেছে প্রেমকে পবিত্র আখ্যা দিয়ে। লেখা-লেখিতে, বক্তব্য-বিবৃতিতে বিশ্ব ভাসবাসা দিবস নামে বেহায়া দিবসকে উস্কে দিয়েছে। এদেরকে বুদ্ধিজীবী বলা যায় না। এরা মানবতার শত্রু। সভ্যতার দুশমন। প্রাশ্চাত্যে এ দিবসটি শত শত বছর ধরে পালিত হয়ে আসলেও আমাদের দেশে কিন্তু এর বিশবাষ্প ছড়িয়েছে বহু পরে। আমাদের দেশে দিবসপ্রিয় একজন সাংবাদিক তার নাম শফিক রেহমান। সে ১৯৯৩ সালে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন পত্রিকার মাধ্যমে দিবসটির আমদানি করে। বাঙালিদের একটি নতুন দিবসের সাথে মূলত সেই প্রথমে পরিচয় করিয়ে দেয়। তবে সে একটু চালাকি করে দিবসটিকে ভ্যালেন্টাইনস ডে নাম না দিয়ে ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ হিসেবে বিবৃত করে। এতে বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের কাছে দিবসটি প্রিয় হয়ে উঠে। শফিক রেহমানের দেখা দেখি অন্যান্য পত্রিকাগুলোও শুরু করল দিবসটি নিয়ে আলাদা আয়োজন। পূর্ণ কভারেজ দিতে থাকল ভালবাসা দিবসকে। এভাবে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠে ভালবাসা দিবস। দিবসটি যদিও পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুসরণ, যদিও মুসলিম সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার সাথে সাথে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। তবুও আমাদের তথাকথিত মিডিয়াগুলো তরুণ প্রজন্মকে মুসলিম সংস্কৃতি থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। আমাদের তরুণ-তরুণীদের সামনে দিবসটিকে এতো লোভনীয় আকারে উপস্থাপন করছে যে এর ফলে অনেক রক্ষণশীল পরিবারের সন্তানরাও এ দিন নিয়ন্ত্রণ হারা হয়ে যায়। আবার অনেকে জেনে বুঝেও শুধুমাত্র বাণিজ্যিক কারণে এ দিবসটি নিয়ে অতি বাড়াবাড়ি করে থাকে। তারা ১৪ ফেব্রুয়ারির কয়েকদিন আগ থেকে শুরু করে তার কয়েকদিন পর পর্যন্ত এ দিবসকে ঘিরে নানা রকম প্রচারণা চালায়। বিভিন্ন কোম্পানী এ দিবস উপলক্ষে নানা অপার দিয়ে তরুণদেরকে আকর্ষণ করে। বড় বড় হোটেলগুলোর হলরুমে তারুণ্যের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। নানা রঙের বেলুন আর অসংখ্য ফুলে স্বপ্নিত করা হয় হলরুমের অভ্যন্তর। অনুষ্ঠানের সূচিতে থাকে লাইভ ব্যান্ড কনসার্ট এবং উদ্দাম নাচ। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত আগতদের সিংহ ভাগই অংশ নেয় সে নাচে। এভাবে নাচতে নাচতে হায়া মায়া, সভ্যতা-শালীনতা সব হারিয়ে আমাদের প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সভ্যতা, সংস্কৃতি, মনুষত্ব ও মানব সমাজকে রক্ষা করতে উদ্যোগ নিতে হবে। সচেতন হতে হবে অভিভাবকদের। সরকার ও প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে বেহায়াপনা ও বাণিজ্য বন্ধের। সিদ্ধান্ত নিতে হবে কঠিনভাবে যাতে করে কোন তরুণ তরুণী এই ১৪’ই ফেব্রুয়ারী, ভালবাসা দীবস উপলক্ষে চাইনিজ, রেস্টুরেন্ট পার্ক গুলোতে আবেগময় প্রেমিক প্রেমিকাগণ অশ্লীলতার দিকে ঝুঁকে না পরে এবং পরিবারের মান সম্মান ধুলোয় যেনো না মিশে। তাই আসছে ১৪’ই ফেব্রুয়ারী প্রতিটি বাবা-মায়ের কর্তব্য তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তার সন্তানদের উপর খেয়াল রাখা তাঁরা কোনো প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে না পারে, তাই প্রশাসনের কাছেও বিনীত অনুরোধ আমাদের ছেলে মেয়েরা এই অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা থেকে যেনো বাঁচতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন, মনে রাখবেন আপনারাই রাষ্ট্রের সম্পদ, আপনাদের প্রহরায় বাংলাদেশ আজ নিরাপদ।

পূর্ববর্তী খবরকনকর্ড রাজধানী প্রকল্প প্লট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ্ রেজাউল মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম
পরবর্তী খবরভোলায় ১২ ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৪৪ জন মেম্বারদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত।