সরোয়ারের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মোজাম্মেল স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে।

0
45

দৈনিক ভোলা সময় নিউজ।

ইত্তিজা হাসান মনির, জেলা প্রতিনিধি বরগুনা

বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলা কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের গেন্ডামারা গ্রামের আব্দুস সোবাহান তার ছেলে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মোজাম্মেলকে (৯) নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ঘুরেও বিচার পায়নি।

তালতলীর কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের গেন্ডা মারা গ্রামে বেপরোয়া সরোয়ার কর্তৃক নয় বছরের শিশু নির্যাতনের তথ্য পাওয়া গেছে।

নির্যাতিত শিশুটির নাম মোজাম্মেল (৯)। শিশুটি একই ইউনিয়নের ১১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী। শিশুটির বাবা সোবাহান (৩৯) তিনটি সন্তানের জনক । ঢাকায় বেঙ্গল সোলার ডেভলপমেন্ট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতেই চাকরি হারিয়ে অবস্থান করছেন। শিশু মোজাম্মেল তার বাবার দ্বিতীয় সন্তান।

অভিযুক্ত ব্যক্তি সরোয়ার (৩৫) তালতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের গেন্ডা মারা গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। অভিযুক্ত সরোয়ার পেশায় নিজ দোকানে কম্পিউটার (মেমোরি) লোড এর ব্যবসা করেন একটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক। ইবতেদায়ী মাদ্রাসার চাকরি দেওয়ার নামে অভিযুক্ত সরোয়ার নিজাম সহ বেশ কিছু লোকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

ঘটনার আগের দিন অভিযুক্ত সরোয়ার এর মেয়ে তাবাসসুম(১০) ও মোজাম্মেল স্কুলের মাঠে খেলাধুলার একপর্যায়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে তাবাসসুমের ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরে পরবর্তীতে তাবাসসুম বাড়িতে গিয়ে মোজাম্মেল মেরেছে বলে তার মা-বাবার কাছে অভিযোগ করেন।

ঘটনার দিন ০৩.১১.২১ইং স্কুল ছুটির পরে বিকেল বেলা শিশু মোজাম্মেল খাস পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত সরোয়ার পিছন দিক থেকে শিশু মোজাম্মেলের ঘাড় ও মাথায় প্রচন্ড আঘাত করে তার মেয়ে তাবাসসুমের সাথে এরকম না করার জন্য হুঁশিয়ার করে জায়গা ত্যাগ করেন, আর ভবিষ্যতে এরকম করলে শিশু মোজাম্মেলের হাত-পা ভেঙ্গে দিবে বলে সরোয়ার অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেন।

ঐদিন শিশু মোজাম্মেলের পিতা সোবাহান জরুরী কাজের জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। দুদিন পরে সোবহান বাড়িতে আসলে শিশু মোজাম্মেলের নাক দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় । ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোজাম্মেলের প্রাইভেট টিচার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন আমরা মোজাম্মেলের রক্তক্ষরণ দেখেছি।নিরুপায় হয়ে সোবাহান শিশু মোজাম্মেলকে সাথে নিয়ে তালতলী একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার প্রাথমিকভাবে দেখে কিছু ঔষধ লিখে দেন, মাথায় চোটের কারণে রক্তক্ষরণ ও বমি বমি ভাব হতে পারে বলে ডাক্তার বলেন এবং ঔষধে না কমলে শিশু মোজাম্মেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তার বরিশাল নিয়ে যেতে বলেন। বরিশাল ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তার মোজাম্মেল কে মাথায় সিটি স্ক্যান করতে বলেন। পরীক্ষার পর ডাক্তার বলেন মাথায় প্রচন্ড প্রচন্ড আঘাতের পরে শিশুটির মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং মস্তিষ্ক বিকার হয়েছে স্বাভাবিকভাবে কোন কিছু দেখলে সে ভয়ে আতঙ্কিত হয়।

অভিযুক্ত সরোয়ারের চাচা আব্দুল হালিম হালিম হাওলাদার বলেন, বেশ কিছুদিন পূর্বে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত সরোয়ার আমাকে নাকে মুখে এবং দাড়ি ধরিয়া ঘুসি মারে, তার বক্তব্যে আরো স্পষ্টতা প্রকাশ পায় যে, সরোয়ার এর শ্বশুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারির প্রভাব খাটিয়ে সালিশ গনকে কনভেন্স করে।

ভুক্তভোগী আমির হোসেন বলেন, সরোয়ার একজন ঊশৃংখল প্রকৃতির লোক। গত এক বছর পূর্বে আমার একটি পোষা ছাগল ছিল। সরোবরের বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলে খামখেয়ালীপনা বসতো সরোয়ার ছাগলটির পা কেঁটে ফেলে। সরোয়ার এর অত্যাচারে এলাকার লোক অতিষ্ঠ। সারোয়ারের ভয় প্রতিবেশী মুখ খুলতে সাহস পায় না।

নির্যাতিত শিশুটির বাবা সোবহান বলেন, সরোয়ার আমার ছেলেটিকে অহেতুক মারধর করেছে।সরোয়ার আমার ছেলেকে মারার কারনে বমি বমি সহ নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে ছেলের পিছনে চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছি, গ্রাম্য সালিশ মীমাংসায় যাবে কথা বলে সরোয়ার নানা রকমের তালবাহানা করে।

ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর বলেন, এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে শিশুটির বাবা সোবহান আমাকে জানিয়েছেন, যেহেতু সরোয়ার এবং সোবাহান সম্পর্কে আত্মীয়-স্বজন ভাই সম্পর্ক। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি সাপেক্ষে মীমাংসা দিবে বলে সাংবাদিকদের সাথে একথা বলেন।

পূর্ববর্তী খবরবোরহানউদ্দিন ৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড।
পরবর্তী খবরএকটা গুলি চললে দশটা গুলি চলবে”বোরহানউদ্দিনে নৌকা প্রার্থীকে পক্ষিয়া ইউপি ছাত্রলীগ সভাপতির হুমকি।