লালমোহনে মিথ্যা মামলায় উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক শাহাবুদ্দিন কে ফাসালেন ইউপি সদস্য

0
3

দৈনিক ভোলা সময় নিউজ।

লালমোহনে মিথ্যা মামলায় উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শাহাবুদ্দিনকে ফাঁসালেন ইউপি সদস্য

লালমোহন প্রতিনিধিঃ

লালমোহন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শাহাবুদ্দিনকে সালিশ মেনে ডেকে নিয়ে তার ওপর হামলা চালিয়ে তাকেসহ তার ভাইদের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্য ফারুক চক্রান্ত করে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লালমোহন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে বুইল্লা ওয়ালা গ্রামে ৮ সেপ্টেম্বর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ফারুক মেম্বারের ছোট ভাই সোহাগ মাল ৩নং ওয়ার্ডের শামসুদ্দিনের থেকে ৮শতাংশ জমি কিনে। উক্ত জমি ও লেনদেন করা নিয়ে সামসুদ্দিন ও জমির অন্যান্য ওয়ারিশ এবং সোহাগ মালের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি ফয়সালা করার জন্য সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে লালমোহন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শাহাবুদ্দিনকে সালিশ মেনে ডেকে নেয় ফারুক মেম্বার, তার ভাই সোহাগ, খোরশেদ মাল ও সোহরাব মাল। সালিশ বৈঠকে উভয় পক্ষের মানতা সালিশ হিসেবে লালমোহন পৌরসভার মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন। কিন্তু মেয়র সালিশিতে উপস্থিত ছিলেন না।
সালিশ বৈঠকে ফারুক মেম্বার তার পক্ষে ব্যাপক লোকজন নিয়ে যায়। সালিশি চলাকালে বিষয়টি নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষের মধ্যকার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলাপ আলোচনার একপর্যায়ে কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই ফারুক মেম্বার, সোহাগ মাল, খোরশেদ মাল, সোহরাব মাল ও তাদের নেয়া লোকজন মিলে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শাহাবুদ্দিনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
পরে উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ফারুক মেম্বারের ভাই সোহরাব বাদী হয়ে লালমোহন থানায় মামলা দায়ের করে। লালমোহন থানার মামলা নং ০৮। উক্ত মামলায় শাহাবুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে ভোলা জেল হাজতে পাঠিয়েছে লালমোহন থানা পুলিশ।
লালমোহন পৌরসভার মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন বলেন, সালিশিতে আমি যেতে পারিনি বিশেষ কাজ থাকার কারণে। শাহাবুদ্দিন আমাকে ফোন করে বললো ভাই আপনি আমাকে এদের বিষয়টি ফয়সালা করতে বললেন। আপনার এরা আমাকে সালিশি করার জন্য ডেকে আনলো, সালিশি চলাকালে ফারুক মেম্বার ও তার ভাইরা আমার ওপর হামলা করেছে। একথা শোনার পর আমি তাৎক্ষণিক সেখানে গেলাম। দেখলাম শাহাবুদ্দিনের জামাও গেঞ্জি ছেঁড়া। উপস্থিত অন্যান্য যারা ছিল তারা বললো ফারুক মেম্বার ও তার ভাইরা শাহাবুদ্দিনকে মেরেছে। ফারুকের কাছে ঘটনা জানতে চাইলে সে এবং তার ভাই সোহরাব মাল মিলে সোহাগ মালকে মারধর করে। অথচ ওই মারপিটের ঘটনায় তারা শাহাবুদ্দিনকে ও তার ভাইদের দায়ী করে মামলা করেছে। আমি আশা করি প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা জেনে ব্যবস্থা নিবেন।
শাহাবুদ্দিনের পরিবার ও পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ডের জনগণ মামলাটিকে মিথ্যা বলে দাবি করেন। তারা বলেন, শাহাবুদ্দিন একজন ব্যবসায়ী। উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক। সততা ও নিষ্ঠার সাথে সে দায়িত্ব পালন করে আসছে। মাননীয় এমপি আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন মহোদয়ের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য সে কাজ করে। মূল ঘটনা আড়াল করে ফারুক মেম্বার তাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমরা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই এবং শাহাবুদ্দিনের মুক্তি চাই।
শাহাবুদ্দিনে ভাই মামলার ৪নং আসামি হেলাল জানান, তারা আমার থেকে জমি কিনেছে বলে দাবি করে মামলায় উল্লেখ করেছে। আমি তাদের কাছে কোনো জমি বিক্রি করিনি। তাদের এ দাবি মিথ্যা এবং মামলাটি মিথ্যা। ফারুক মেম্বার ও তার ভাইদের ওপর কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। বরং তারা হামলা করে আমার ভাই ও আমাদেরকে ফাঁসিয়ে দেয়। তারা বিচার করার জন্য তাদের সালিশ হিসেবে আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে বিপদে ফেলেছে। আমরা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই।
উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আবুল হাসান রিমন এলাকার বাইরে থাকায় ঘটনা লোক মারফত শুনেছেন বলে জানান। তিনি এ ঘটনায় সত্যতা যাচাইয়ের দাবি করেন এবং এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ইউসুফ মঞ্জু ও জয়ন্তচন্দ পন্টিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ প্রকৃত ঘটনা তদন্তের দাবি করে মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শক্তি পদ মৃধা জানান, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পূর্ববর্তী খবরভোলা পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল আহমেদ আয়োজনে তোফায়েল আহমেদের রোগমুক্তির জন্য দোয়া
পরবর্তী খবরভোলায় অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগ