মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ার কারণে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা।

0
9

মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ার কারনেই
ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা।

ইত্তিজা হাসান মনির, বরগুনা প্রতিনিধি।

বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ কবির হাওলাদরের (৩২) বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছে হামিদা(২৮) নামের এক নারী। সাবেক মেম্বার মৃত্য ময়জদ্দিন হাওলাদার ছেলে কবির হাওলাদার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত একজন ইউপি সদস্য। শিক্ষিত মার্জিত এই ইউপি সদস্য প্রতিদ্ধন্ধি পাঁচজন প্রার্থীর সাথে ২১ শে জুলাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিজয় লাভ করেই নিজ এলাকায় কোন মাদক ব্যবসায়ী থাকতে পারবেনা বলে ঘোষনা করেন। বরগুনা শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে ডালভাঙ্গা নামক গ্রাম। গ্রামটি একেবারে বিষখালী নদীর কোল ঘেঁসে হওয়ার কারনে প্রশাসনের যোগাযোগ তেমন চোখে পরেনা বিদায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা নির্ধিদায় ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে।
মাদক ব্যবসা নিজেদের এলাকায় ছড়িয়ে দেয়ার জন্য এবং গ্রামের চার পাশ্বে কাস্টমার পাওয়ার আশায় উঠতি বয়সী ছেলে মেয়ে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে বিনা মূল্যে বিতরনের ব্যবস্থা করছে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সরো হামিদা। মাদক ব্যবসায়ী হামিদা এবং তার স্বামী মোঃ সরোয়ার দীর্ঘদিন রাস্তার পাশ্বে থেকেই মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে। এলাকার এমন কোন মানুষ নেই সরোয়ার হামিদা মাদক সম্পর্কে জানেনা। মাদক ব্যবসায়ী হামিদার মা পারুল বেগম বরগুনার গুলিশাখালী থেকে গাঁজাসহ পুলিশের কাছে ধৃত হয়েছিল। মাদক ব্যবসায় হামিদা এবং তার মা পারুল বেগম একাধিক বার জেল খেটেছে এবং কয়েটি মামলা তাদের নামে রয়েছে। ব্যবসা নিজের এলাকায় সীমাবদ্ধ না রেখে বিভিন্ন এলাকা থেকে উঠতি বয়সী মাদক সেবীরা মটর সাইকেলে এসে তাদের চাহিদা মত মাদক নিয়ে যাচ্ছ। অন্যদিকে সরোয়ার হামিদার বসত ঘরটি নদীর কিনারে হওয়ার কারনে নৌকা, ট্রলারে করেও মাদক নিয়ে যায় মাদক সেবীরা। আর এসব কিছু এলাকার মানুষ দেখেও না দেখার ভান করছে সরোয়ার হামিদার ভয়।
সরোয়ার হামিদার প্রতিবেশী নজরুল ইসলাম নামের এক গাড়ী ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের এলাকার মানুষ এদের কারনে অতিষ্ট। নজরুল বলেন কারো কথারই মূল্য দেয়না এই সরোয়ার হামিদা। মাদকের কারনে আমাদের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এখনই এদের প্রতিরোধ করা না গেলে আমাদের ছেলে মেয়েরা ধ্বংস হয়ে যাবে।
জাকির (৪৮) নামের অন্য এক প্রতিবেশী বলেন, কবির মেম্বার একজন শিক্ষিত মার্জিত মানুষ ছাত্র জীবনে এদিক সেদিকে থেকে লেখা পড়া করেছে, এখন দেশে এসে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। তার নির্বাচনে বিজয়টা অনেকের ভাল লাগেনি বিধায় তার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।

স্থানীয় এক মুদি দোকানদার লাইলী বেগম বলেন, কবির মেম্বার ভাল মানুষ মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ার কারনেই হামিদা তার নামে ধর্ষণের মামলা করেছে। আমার দোকান স্কুলের পাশ্বেই স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের ইয়াবা খাওয়াচ্ছে সরো হামিদা যাতে তার বেচা বিক্রি বেশী হয়। লামিয়া ৯ম শ্রেনী সুমাইয়া ১০ ম শ্রেনী এই দুই ছাত্রীকে বেশ কয়েকবার ইয়াবা সেবন করিয়েছে। ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী লামিয়া বলেন আমাকে হামিদা বাসায় নিয়ে ইয়াবা খেতে বলেছে আমি প্রথমে খেতে চাইনি হামিদা বলে তোমার স্বাস্থ্য ভাল হবে। আমাকে আর ফারজানাকে কয়েকবার হামিদার বাসায় নিয়ে ইয়াবা খেতে দিয়েছে।
ডালভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক মোঃ আঃ রহমান বলেন সরোয়ার হামিদা যদি এভাবে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যায় তাহলে আমাদের স্কুল পরিচালনা করা সম্ভব হবেনা। সকল ছাত্র ছাত্রীই মাদকে আসক্ত হয়ে পরবে। কবির মেম্বার একটি ভাল ছেলে তার বিরুদ্ধ ধর্ষণের মামলাটি একেবারেই মিথ্যা বানোয়াট, যেদিন এই মামলাটি কবিরের বিরুদ্ধে করেছে সেদিনই কবিরের বউয়ের বরগুনা কুয়েত প্রবাসী হাসপাতালে সিজারে বাচ্চা হয়েছে কবির সেখানেই ব্যাস্ত ছিল। লামিয়ার নানা আঃ হালিম বলেন আমার নাতী ৯ম শ্রেনীতে পড়ে সরোয়ার হামিদা তাদের বাসায় নিয়ে মাদক ইয়াবা খেতে দিয়েছে, আমার নাতীর ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছে আমি এর বিচার চাই।
ইউপি সদস্য কবির হাওলাদার বলেন, আমার বিষয় যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন আমি মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেছি বিদায় মাদক ব্যাবসায়ী সরো হামিদা এবং মাদক সেবনকারীরা একত্রিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মামলা করেছে।
এ ব্যাপারে ঢলুয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ আজিজুল হক স্বপন বলেন কবিরের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ হয়েছে। কবির আমার ইউনিয়নের সদস্য সে যদি কোন অন্যায় করে থাকে তাহলে অবশ্যই আইন আদালতের মাধ্যমে বিচার হবে।
বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন মামলাটি সম্ভবত কোর্টে হয়েছে, আমাদের কাছে এ ধরনের অভিযোগ আসলেই সাথে সাথে আইনী ব্যবস্থা নিব। মাদকের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স, মাদক ব্যবসায়ী মাদক সেবনকারী সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

পূর্ববর্তী খবরদৌলতখানে সুপারি বাগান থেকে বৃদ্ধের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার।
পরবর্তী খবরঅদৃশ্য শক্তির কারণে ২ বছরেও দুদক মামলার অগ্রগতি নেই।