আশিকুর রহমান শান্ত
ভোলা প্রতিনিধি
ভোলায় পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাদের মধ্যে আবদুর রহিম (৩২) নামে একজন নিহত হয়েছে। রোববার (৩১ জুলাই) সকাল ১১ টায় শহরের কালিনাথ রায়ের বাজার এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে পুলিশ ও বিএনপি’র ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দেশব্যাপী জ্বালানি, তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে সকালে ভোলা জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছে ভোলা জেলা বিএনপি। এসময় কার্যালয় থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাস্তায় বের হতেই পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। সেখানে একপর্যায়ে পুলিশের সাথে নেতাকর্মীরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালালে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর চড়াও হয়ে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় পুলিশ একপর্যায়ে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে করে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতিও হয়ে ওঠে আরও ভয়াবহ। বেধে যায় পুলিশ নেতাকর্মীদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষ। চলতে থাকে পুলিশের পক্ষ থেকে মুহুমুহু রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ। এতে করে বিএনপি’র নেতাকর্মীর মধ্যে আব্দুর রহিম (৩২) নামে এক নেতা নিহত সহ ১৫ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় তাদেরকে ভোলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে তাদের মধ্যে পাঁচজনকে বরিশাল শেবাচিমে রেফার করা হয়।
এ ব্যাপারে ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর বলেন, বিএনপি’র শান্তিতে বিশ্বাসী, তারা কখনো উশৃংখল অশান্তি রাজনীতি করে না। আজ আমাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এক পর্যায়ে আমাদের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হলে পুলিশ তাদের উপর বৃষ্টির মতো টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে করে আমাদের এক নেতা-কর্মী নিহত সহ ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এমনকি আহত হয়েছে আরো ৩০ জন। এভাবে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদেরকে মেরে আহত করে রক্তাক্ত করে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ফরহাদ হোসেন সরদার বলেন, বিএনপি’র নেতাকর্মীরা তাদের দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালীন কিছু উশৃংখল নেতাকর্মীরা রাস্তায় জড়ো হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর লাঠি দিয়ে আঘাত সহ ইটপাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে। পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ছোড়া ইটপাটকেল ও লাঠির আঘাতে ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই পুরো শহর জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শহরের প্রতিটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।