বরগুনা কাচা বাজারের সভাপতি আল আমীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন সোবহান।
ইত্তিজা হাসান মনির,জেলা প্রতিনিধি বরগুনা।
বরগুনা কাঁচাবাজারে দীর্ঘ ১২ বছর যাবত ব্যবসা করছেন সবজি বিক্রেতা সোবাহান। অভাবের সংসারে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।
কিন্তু হঠাৎ তার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বনটি জোরপূর্বক কেড়ে নিয়েছে কাঁচা বাজারের সভাপতি আল আমিন ও তার সহযোগিরা।
নিজের উপার্জনের একমাত্র দোকানটি ফিরে পেতে দিশেহারা।
সহায়তা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সোবাহানের অভিযোগ, বরগুনা কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আল আমিন অন্যায়ভাবে তার দোকান দখল করে টাকার বিনিময়ে অন্য একজন
ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বরগুনা রিপোটার্স ইউনিটিতে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী মোঃ সোবাহান।
সংবাদ সম্মেলনে কান্না জড়িত কন্ঠে সোবাহান বলেন -আবুল খা নামে এক ব্যক্তির কাছে থেকে কাঁচাবাজারের সভাপতি
আল আমিন খন্দকার এক লক্ষ টাকা ঘুষ নেয় ।এরপর তার পনের বছরের স্বপ্নকে ভেঙে দিয়ে উপার্জনের একমাত্র দোকানটি দখলে নেয়
আল আমিন।তারপর তা বুঝিয়ে দেয়া হয় আবুল খা নামে ওই ব্যক্তিকে।ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করে পরিবার নিয়ে নিদারুণ কষ্টে কাটছে সোবাহানের প্রতিটি মুহুর্ত।
জানা যায়, সোবাহানের দোকানটি মাছ বাজারের পশ্চিম পাশে কাঁচা বাজারের দক্ষিণ মাথায় ফুটপাতে ছিলো।তিনি সংবাদ পরিবেশনের
মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এর সঠিক বিচারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে কাঁচা বাজার কমিটির সহ সভাপতি মো: ইউনুস উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন,কাঁচা বাজারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের দুর্নীতির কারণে
পদত্যাগ পত্র দাখিল করলেও তা গ্রহন করছে না তারা।তাদের অনিয়ম আর দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ ব্যবসায়ীসহ
কমিটির সদস্যরা।
অনুসন্ধান বলছে,বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিদ্দিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তি গত ১৩ অক্টোবর একটি সিআর মামলা
দায়ের করেন এই আল আমিনের বিরুদ্ধে।মামলা নং-৫৪৬/২০২১। এছাড়াও অর্থ আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে বর্তমান
কাঁচা বাজার কমিটির বিরুদ্ধে।আর এসব অপকর্মের মূলহোতা সভাপতি আল আমিন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে- বরগুনা কাঁচাবাজারের সভাপতি আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুকদেব মালি ও কোষাধ্যক্ষ শ্রী শুভঙ্কর কাঁচা বাজারের
ব্যবসায়ী ও পাইকারদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করে।এমনকি কাঁচা বাজার বহনকারী বিভিন্ন গাড়ি থেকেও বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা আদায়
করেন তারা।
এমন অবৈধ কার্যকলাপ এর বিরোধীতা করলে গত ১২ অক্টোবর বরগুনার কাঁচা বাজারের সামনে ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমানকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
পরে তিনি বাদী হয়ে বরগুনা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার সাক্ষীদের কাছ থেকেও বিভিন্ন সময়ে বড় অংকের চাঁদা
দাবি করে আসছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
মামলাটি বর্তমানে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে সিদ্দিকুর রহমানের ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা মতে জবানবন্দি গৃহীত করে দরখাস্তের
বর্ণিত অভিযোগ তদন্তের জন্য বরগুনা সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে চাঁদাবাজ সভাপতি আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুকদেব মালি ও কোষাধ্যক্ষ শ্রী শুভঙ্করকে দ্রুত আইনের আওতায়
এনে বরগুনা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়িক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানান।