ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে ভোলায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।

0
10

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে ভোলায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আশিকুর রহমান শান্ত
ভোলা প্রতিনিধি

বাঙালি জাতির দীর্ঘ স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অনন্য দিন আজ। আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের ডাক দেন।

বঙ্গবন্ধু ১৯৭১-এর ৭ই মার্চ যে ভাষণ দিয়েছিলেন ইতিহাসে তার তুলনা খুঁজে পাওয়া যায় না। বাঙালির হাজার বছরের দুঃখ-বেদনা, বঞ্চনা এবং ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে দূরে থাকার ইতিহাসের ধারাবাহিকতাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর চেতন এবং অবচেতনে এই ভাষণটি তৈরি হয়ে প্রকাশের জন্য উন্মুখ হয়েছিল।

দিবসটি উপলক্ষ্যে ভোলা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক হল রুমে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ভোলা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তামিম আল ইয়ামিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপ-সচিব ও জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, ভোলা জেলা সিভিল সার্জন কে এম শফিকুজ্জামান, ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব, ভোলা জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ আক্তার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার শফিকুল ইসলাম সহ জেলার সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ।

আলোচনা সভায় অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান “এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম” বলে যে আহ্বান জানিয়েছেন। এ থেকেই স্পষ্ট, ৭ই মার্চ ১৯৭১ এ তিনি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ৭ই মার্চের পর সারা বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর শাসন চলেছে, বাঙালি জাতী নিজেকে সেদিন থেকেই পরিপূর্ণ স্বাধীন মনে করেই দেশ চলেছে। তার এই ভাষণের পর থেকে পাকিস্তানের কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয় যায় নি।

২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে, বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, যা চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে থেকে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান বার বার ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে আকাশ বাণী, কলকাতা বার বার প্রচার করে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালী জাতির মহান নেতা। সারা বিশ্বের মুক্তিকামী নীপিড়িত মানবতার আশার আলো ও আলোকবর্তিকা।

১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল নিউজউইক ম্যাগাজিন তাদের প্রচ্ছদজুড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দিয়ে লিড নিউজে ৭ই মার্চের ভাষণের জন্যই তাকে ‘পয়েট অব পলিটিক্’ বা ‘রাজনীতির কবি’ হিসাবে অভিহিত করে । সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৮ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে থেকে ফেরার পথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পরম মমতা ও শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধু গাডির বা পাশের দরজাখুলে দিয়ে সম্মান জানান। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাসে এটি এক ও অভিন্ন এক ঘটনা, যা ইতিহাসে একটি অধ্যায় রচনা করেছে। আমাদের জাতীয় জীবন ও ব্যক্তি জীবনে বঙ্গবন্ধু প্রাসঙ্গিক গর্ব ও অনুপ্রেরণার এক ও অভিন্ন উৎস। ১৩ টি ভাষায় অনুদিত এই ভাষণ সারা বিশ্বে মানবতার আলো ছড়াবে, নিপিড়ীত জনতার শক্তি ও সাহসের উৎস হিসাবে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেন। বাঙালী জাতির প্রতিটি স্তরে বঙ্গবন্ধু চিরন্তন ও চিরঞ্জীব।

পূর্ববর্তী খবরভোলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ,বাঙ্গালি জাতির মুক্তির সনদ” শীর্ষক আলোচনা।
পরবর্তী খবরতোফায়েল আহমেদ না থাকলে ৭ মার্চের তাৎপর্য জানতে পারতাম না- রাসেল আহমদ মিয়া।